শিবপুর উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে নরসিংদী-৩ আসন। ১৯৯১ থেকে টানা ৪ বার এ আসনটি ছিলো বিএনপির প্রয়াত মহাসচিব ও সাবেক স্থানীয় সরকার মন্ত্রী আব্দুল মান্নান ভূঁইয়ার দখলে। ২০০৮ সালে ৯ম সংসদ নির্বাচনে আসনটির দখল হারায় বিএনপি। এর পর দুবার জয় পান আওয়ামী লীগের জহিরুল হক ভূঁইয়া মোহন।
তাই এই আসনে দলের সাংগঠনিক ভিত্তি শক্তিশালী দাবি করে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে আওয়ামী লীগ। এবারও এ আসনে আওয়ামী লীগের হয়ে লড়তে চান বর্তমান সাংসদ জহিরুল হক ভূঁইয়া মোহন। এছাড়াও দলের মনোনয়নপ্রত্যাশায় মাঠে জনসংযোগে ব্যস্ত আছেন ২০১৪ সালের এই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সিরাজুল ইসলাম মোল্লাসহ আরো অন্তত ১০ জন।
এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন ১২ জন। তারা হলেন-বর্তমান সংসদ জহিরুল হক ভুঁঞা মোহন, সাবেক সংসদ সদস্য জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি সিরাজুল ইসলাম মোল্লা, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মাহমুদুল কবির সাহিদ, জেলা আওয়ামী লীগের অর্থবিষয়ক সম্পাদক মাহফুজুল হক টিপু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সামসুল আলম ভুঁইয়া রাখিল, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, সাবেক এমপি প্রয়াত রবিউল আওয়াল খান কিরণের ছেলে ফজলে রাব্বি খান, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আ ফ ম মাহবুবুল হাসান, শাহীন হায়দার পিয়াস, মোহসিনা জান্নাত রিমি, মাসুদ হায়দার, নুরুউদ্দিন মোল্লা।
তবে, নেতারা বলছেন দল যাকে মনোনয়ন দেবে, তার পক্ষেই কাজ করবেন। শিবপুর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সামসুল আলম ভুঁইয়া রাখিল বলেন, ‘যেহেতু আওয়ামী লীগ বৃহৎ রাজনৈতিক দল এখানে অনেক যোগ্য প্রার্থী থাকতে পারেন। জননেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন শত ফুল ফুটবে একটি ফুল বেছে নেবেন। উনি যাকে বেছে নেবেন তাকে নিয়েই আমরা নির্বাচন করবো।’
নির্বাচন প্রসঙ্গে শিবপুর আওয়ামী লীগের সভাপতি মুহসীন নাজির বলেন, ‘আমাদের জনসম্পৃক্ততা আছে, নির্বাচন অবশ্যই হবে। আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে শিবপুরে বিরোধী দলের যে অপতৎপরতা তা প্রতিহত করার শক্তি আমাদের আছে। দল খুব সুসংগঠিত, ঐক্যবদ্ধ।’
এদিকে উপজেলা ও ইউনিয়নে দলীয় কমিটি থাকলেও রাজনীতির মাঠে নীরব জাতীয় পার্টি। অন্যদিকে, আন্দোলনে ব্যস্ত থাকলেও বিএনপিতে আছে একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী। তবে, সম্ভাব্য প্রার্থীরা এখন দলীয় কর্মসূচিকেই গুরুত্ব দিচ্ছে দলটি। আর ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও অন্যান্য দলের প্রার্থীদের নাম শোনা যায় নাই।
শিবপুর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু সালেক রিকাকদার বলেন, ‘যদি নির্দলীয় সরকারে ফেয়ার নির্বাচন হয়, আর আমরা অংশ নেই, তাহলে বিএনপির প্রার্থী অনেক ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হবে।’
এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মনজুর এলাহী বলেন, ‘শিবপুরে বিএনপিতে আমরা সকলে ঐক্যবদ্ধ, একসাথে মিলেই কাজ করছি। প্রার্থী একদলে একাধিক থাকবে সেটাই স্বাভাবিক।’
এছাড়া ও এই আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফর্ম সংগ্রহ করেছে মাসুম মৃধা.
স্থানীয়রা জানান, বিএনপির প্রয়াত মহাসচিব আব্দুল মান্নান ভূ্ইঁয়ার অনুসারীদেরও উল্লেখযোগ্য প্রভাব থাকে এখানকার নির্বাচনে। আসন্ন নির্বাচনে তাই তাদের সমর্থনেই ভারী হতে পারে যে কোন দলের পাল্লা।