মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের ছাদে এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে সদর উপজেলার ২নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. শেখ শাকিলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) রাত সাড়ে ১১টার দিকে ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
এর আগে মঙ্গলবার (৪ জুলাই) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের পুরাতন ভবনের ছাদে এ ঘটনা ঘটে বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। শেখ শাকিল সদর উপজেলার চরকেওয়ার ইউনিয়নের চরমুশুরা এলাকার হাবিবুরের ছেলে। তারা শহরের দুধবাজার সংলগ্ন খালইস্ট এলাকার একটি আবাসিক ভবনের ভাড়াটিয়া।
জানা গেছে, ধর্ষণের শিকার কিশোরীর বাবা রিকশাচালক ১৫ বছর আগে মারা যান। অসহায় মা শিশুটিকে (ভুক্তভোগী কিশোরী) বিভিন্ন বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করতেন। পরে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পার্টটাইম আয়ার কাজ নেন। মাসিক ৩ হাজার টাকায় এক মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে কোনোরকম জীবনযাপন করছেন। পৌরসভাধীন শিলমন্ডি এলাকায় নানাবাড়িতে ছোট ছাপড়া ঘরে থাকতেন তারা।
ভুক্তভোগী কিশোরী জানায়, তার মা কর্মচারী হওয়ায় প্রায়ই হাসপাতালে যাওয়া-আসা ছিল তার। মঙ্গলবার রাতে মায়ের জন্য হাসপাতালে অপেক্ষা করছিল সে। সেই সময় ৪-৫ জন সহযোগীকে নিয়ে হাসপাতালে অবস্থান করছিলেন স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা শেখ শাকিল। রাত সাড়ে ১২টার দিকে হাসপাতালে লোকজন কমে গেলে প্রয়োজনীয় কথা আছে বলে তাকে ডেকে সিঁড়ির সামনে নিয়ে প্রেমের প্রস্তাব দেন শাকিল। এতে অস্বীকৃতি জানালে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাকে টেনে হাসপাতালের ছাদে নিয়ে ধর্ষণ করেন। পরে বিষয়টি কাউকে জানালে হত্যার হুমকি দিয়ে চলে যান। ঘটনার পর হাসপাতালে চিকিৎসা নেয় ভুক্তভোগী।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে শেখ শাকিলের মুঠোফোনে কল করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারিকুজ্জামান জানান, কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনায় শাকিল নামের একজনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) থান্দার খাইরুল হাসান বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি জানতে পেরে তৎক্ষণাৎ মেয়েটির পরিবারকে আইনগত সহায়তা করি। রাত সাড়ে ১১টার দিকে ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে শাকিলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করেন। ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর থেকে অভিযুক্ত পলাতক রয়েছে। পুলিশ আসামিকে গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করেছে।