ডালিম খান
নরসিংদীতে জেলা ছাত্রদলের আভ্যন্তরীণ কোন্দলের জের ধরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত ছাত্রদল নেতা সাদেকুর রহমান (৩২) ঢাকা মেডিকেলে মারা গেছেন। গুলিবিদ্ধ অপর ছাত্রদল নেতা আশরাফুল (২২) ঢামেকে চিকিৎসাধীন। বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টায় শহরতলীর চিনিশপুরে জেলা বিএনপির কার্যালয় সংলগ্ন স্থানে সংঘর্ষের ঘটনায় ২ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হলে তাদের ঢামেকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাদেকুর রহমানকে মৃত ঘোষণা করেন।
জেলা ছাত্রদলের সদ্য বহিষ্কৃত সহ সহসভাপতি মাইন উদ্দিন ভুইয়া এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। নিহত সাদেকুর রহমান শহরতলীর বাদুয়ারচর এলাকার মৃত আলাউদ্দিনের ছেলে ও সদ্য বহিষ্কৃত জেলা ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক। পদবঞ্চিত ছাত্রদল নেতারা জানান, গত ২৬ জানুয়ারি সিদ্দিকুর রহমান নাহিদকে সভাপতি, মাইনুদ্দিন ভুইয়াকে সিনিয়র সহ-সভাপতি ও মেহেদী হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে জেলা ছাত্রদলের ৫ সদস্য বিশিষ্ট (আংশিক) কমিটি অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রদল।
এরপর থেকে ঘোষিত কমিটি বাতিলের দাবিতে পদবঞ্চিত ছাত্রদল নেতাকর্মীরা আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন। এই জেরে কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক খায়রুল কবীর খোকনের চিনিশপুরের বাসভবন তথা জেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ে একাধিকবার হামলার ঘটনা ঘটে। ছাত্রদলের কমিটি বাতিলের আন্দোলনের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার চিনিশপুরে জেলা বিএনপির কার্যালয় সংলগ্ন স্থানে মোটরসাইকেল শোডাউন করে বিক্ষোভ করছিলেন পদবঞ্চিত ছাত্রদল নেতাকর্মীরা। এসময় ছাত্রদলের অপর গ্রুপের নেতাকর্মীরা অতর্কিতে তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে সাদেকুর রহমান ও পিঠে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয় আশরাফুল ইসলাম।
পরে পদবঞ্চিত ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা আহতদের উদ্ধার করে নরসিংদী জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে দুইজনকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠায়। সেখানে নেয়ার পর সাদেকুর রহমানকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। জেলা ছাত্রদলের সদ্য বহিষ্কৃত সহ সহসভাপতি মাইন উদ্দিন ভুইয়া বলেন, জেলা বিএনপির আহবায়ক খায়রুল কবির খোকনের নির্দেশে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান নাহিদের নেতৃত্বে এই হামলা ও গুলির ঘটনা ঘটেছে। ঢাকায় নেয়ার পর সাদেকুর রহমানকে মৃত ঘোষণা করেছেন চিকিৎসক। এই হত্যার নিন্দা ও দায়ীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবী করছি।
নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফজলে ই খোদা বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে । জেলা হাসপাতালে গিয়ে একজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া গেছে, অপর একজনকে এর আগেই ঢাকায় পাঠানো হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। পরে সেখানে কেউ মারা গেছে কী না এমন তথ্য এখনও পাইনি। কী কারণে এই ঘটনা ঘটেছে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।