দাবাড়ু পরিবারে জন্ম, জিয়াউর রহমানও নিজের ধ্যান-জ্ঞান বানিয়েছিলেন দাবাকেই। বাবা পয়গাম উদ্দিন আহমেদের পথ ধরেই তিনি দাবায় এসেছিলেন। হয়েছেন গ্র্যান্ডমাস্টার, এরপর ছেলে তাহসিন তাজওয়ার জিয়াও একই পথে হেঁটে হয়েছেন ফিদে মাস্টার। যে দাবাকে ধ্যান-জ্ঞান বানিয়েছিলেন, সেই দাবা খেলতে খেলতেই জিয়া মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, জিয়া হার্ট অ্যাটাক করেছেন। এরপর সন্ধ্যায় হাসপাতালে নেওয়া হলে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়া। এর আগে বিকেল ৫টা ৫০ মিনিটে বোর্ড থেকে মাথা ঘুরে পড়ে যান জিয়া। পাঁচ মিনিটের মধ্যে দাবা ফেডারেশনের তৃতীয় তলা থেকে নামিয়ে তাকে গ্র্যান্ডমাস্টার রাজীবের গাড়িতে উঠানো হয়। দশ মিনিটের মধ্যেই ইব্রাহিম কার্ডিয়াকে পৌঁছায় গাড়ি। জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা তার পালস পাননি।
সাধারণত ৫ মিনিট অপেক্ষা করা হলেও জিয়ার জন্য চিকিৎসকরা ২০ মিনিট চেষ্টা করেছেন। চিকিৎসকরা প্রাথমিকভাবে আর নেই বললেও, তার স্ত্রী তাসমিন সুলতানা লাবণ্য অশান্ত হয়ে পড়েন ও অন্য হাসপাতালে নেওয়ার উদ্যোগ নেন। ফেডারেশন ও দাবাড়ুরা তাকে কয়েক দফা বোঝান। এক ঘণ্টা পর তিনি ও তার পরিবার আশ্বস্ত হলে ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয়।
আজ (শুক্রবার) পল্টনের দাবা ফেডারেশনে জাতীয় দাবা চ্যাম্পিয়নশিপের ১২তম রাউন্ড চলছিল। গ্র্যান্ডমাস্টার এনামুল হোসেন রাজীবের বিপক্ষে ভালো পজিশনেই ছিলেন আরেক গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমান। হঠাৎ-ই দাবা ফেডারেশনের রুমে দুই দাবাড়ু শাকিল ও নাইম হন্তদন্ত হয়ে দৌড়ে এসে জানান, ‘জিয়া ভাই মাথা ঘুরে পড়ে গেছে।’ সবাই ধরাধরি করে নিচে নামিয়ে নয় মিনিটের ব্যবধানে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে।
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই মারা গেছেন জিয়া। সেই খবরে হাসপাতালে অনেক উৎকণ্ঠা নিয়ে অপেক্ষা করা স্ত্রী লাবণ্য, সন্তান তাহসিন তাজওয়ারসহ অন্যান্য তারকা দাবাড়ুরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। উল্লেখ্য, ১৯৭৪ সালের ১ মে জন্ম নেন গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫০ বছর।
গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমানের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।