প্রিয় শিবপুরবাসী, আসসালামু আলাইকুম।
আজ আমি আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি আমার কিছু না বলা কথা নিয়ে।
আমার জীবনটা আর দশজন সাধারণ মানুষের মতো না। আপনারা জানেন, আমার বয়স যখন ৪ বছর; তখন আমি আমার বাবাকে হারিয়েছি। আমার বাবার সাথে আমার তেমন কোনো স্মৃতি নেই। বাবার আদর বলতে আমি কিছুই পাইনি। আমি সবকিছুর বিনিময়ে একবার, শুধু একটিবারের জন্য আমার বাবাকে ফিরে পেতে চাইতাম। শুধু একবার বাবার বুকে মাথা রাখতে চাইতাম আমি।
বাবাকে হারানোর পর যে চাচারা আমাকে ও আমার পরিবারকে আগলে রেখেছিলেন, সেই অরুন ও হারুন কাকুও পাশে নেই। যে হারুন চাচা বাবার স্নেহ ও ভালোবাসা দিয়ে আগলে রেখেছিলেন আমাকে ও আমার পরিবারকে; ৭৫ বছর বয়সী আমার সেই চাচাকেও ঘাতকরা নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করেছে। আমার বাবাকে যখন হত্যা করা হয়, তখন আমি ছোটো ছিলাম, কষ্টটা বুঝিনি। কিন্তু হারুন কাকু যখন গুলিবিদ্ধ হলেন, দেশে-বিদেশে বিভিন্ন হাসপাতালে ওনার পাশে থেকে দেখেছি কিভাবে আমার পৃথিবীটা আবার উলটপালট হয়ে গিয়েছে।
প্রিয় শিবপুরবাসী, আমি আপনাদের কাছে বিনয়ের সাথে জানতে চাই; কি অপরাধ ছিলো আমার ও আমার ভাই তাপসের? কেনো বারবার ঘাতকের গুলি আমার পরিবারের দিকে ছুটে আসে?
আমার বাবা-চাচারা কালোটাকা বানানোর দিকে নজর দেননি, কোনো সন্ত্রাসী বাহিনী লালন করেননি। আমার বাবা-চাচারা দলের জন্য জীবন যৌবন বিলিয়ে দিয়েছেন। নেতা বানিয়েছেন, কর্মীর জন্য ঘাম ছুটিয়েছেন। আমার বাবা-চাচারা অনেক লিলিপুটকে গালিভার বানিয়েছেন। যারা আমার বাবা-চাচার রক্ত-ঘামের উপর সওয়ার হয়ে নেতা/এমপি হয়েছেন; আজ তারা সবাই একজোট হয়েছে।
প্রিয় শিবপুরবাসী, যেদিন আমার চাচা মারা যান; সেদিন এই শিবপুরের মাটিতে ঘাতকরা উল্লাস করেছে, বিরিয়ানি পার্টি করেছে। এই নির্মমতার বিচারের ভার আমি আল্লাহর কাছে ও আমার প্রিয় শিবপুরের জনতার উপর দিয়ে গেলাম।
আমার অর্থ নাই, সন্ত্রাসী বাহিনী নাই; তাই ওরা বলে আমি দুর্বল। কিন্তু আমার শক্তি শিবপুরের আপামর জনতা। যুগে যুগে এটা প্রমাণিত হয়েছে জনতার শক্তির কাছে সব অপশক্তি মাথানত করতে বাধ্য হয়।
তাই আমি স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, আমি এই শিবপুরের মাটির সন্তান। এই শিবপুরের মাটিতেই আবার মিশে যাবো আমি আমার বাবা-চাচার মতো। কিন্তু কোনো অপশক্তি, সন্ত্রাস ও কালোটাকার কাছে মাথানত করবোনা। আমাকে ও আমার কর্মীদের ভয় দেখিয়ে দমানো যাবেনা। বংগবন্ধুর কাছে ধার নিয়ে বলতে চাই: আমার এবারের সংগ্রাম শিবপুরকে মাদক ও সন্ত্রাসের কালো থাবা থেকে মুক্ত করার সংগ্রাম। রক্ত যখন দিয়েছি, আরো দিবো; তবু এই শিবপুরের মানুষকে সন্ত্রাস ও কালো টাকার কবল থেকে মুক্ত করেই ছাড়বো ইনশাআল্লাহ।
আমি কথা দিচ্ছি আগামীদিনে আমি সম্মানিত লোকের সম্মান দিব। আমি শিবপুরে সহবস্থানের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি, আমি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে, মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে।
পরিশেষে এটাই বলতে চাই, আজ শিবপুরের সব সন্ত্রাসী ও কালোটাকার মালিকরা একজোট হয়ে জনগণের বিপক্ষে দাঁড়িয়েছে। আমি চাই বুলেটের উপর ব্যালট জয়ী হউক; কালোটাকা, সন্ত্রাস ও মাদকের বিরুদ্ধে জনতার শক্তির জয় হউক। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।